বৃষ্টি ও সুমন সম্পর্কে শালী-দুলাভাই। কিন্তু তা একপর্যায়ে রূপ নেয় অনৈতিক সম্পর্কে। বড় বোনের স্বামী সুমনের সাথে বেশ কয়েক বছর ধরে বৃষ্টির এ সম্পর্ক চলে আসছিল। ঘটনা জানাজানি হলে পারিবারিকভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা হয়। এরপর নিজের বোনের সংসার বাঁচাতে সুমনের কাছ থেকে দূরে সরে আসতে থাকে বৃষ্টি। এমনকি পরিবারের লোকজন বৃষ্টির বিয়েও ঠিক করে। এতে ক্ষিপ্ত হয় দুলাভাই সুমন।
বিষয়টি সমঝোতার কথা বলে বৃষ্টিকে নিয়ে ঘটনার দিন মগবাজারের আবাসিক হোটেল বৈকালীতে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে রুম ভাড়া নেয় সুমন। তাদের মধ্যে আগের বিষয়গুলো নিয়ে প্রচণ্ড ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে সুমন বৃষ্টির সাথে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে চাইলে বৃষ্টি রাজি না হওয়ায় সুমন ক্ষিপ্ত হয়ে বৃষ্টির ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। এই ঘটনায় নিহত বৃষ্টির বাবা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গত সোমবার মগবাজারের একটি আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয় বৃষ্টির লাশ। ঘটনার ৩২ ঘণ্টা পর অভিযুক্ত সুমনকে মিরপুর পাইকপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৩। বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আলোচিত ওই খুনের বিষয় গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেন র্যাব ৩-এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরানুল হাসান।
ইমরানুল হাসান জানান, ‘আলোচিত এই ঘটনায় একমাত্র আসামি সুমনকে মিরপুরে পাইকপাড়া হতে র্যাব ৩-এর একটি আভিযানিক দল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন সুমন। সুমন জানায় চার বছর ধরে শ্যালিকা বৃষ্টির সাথে তাঁর সম্পর্ক। পাবিবারিকভাবে বিষয়টি জানাজানি হলে, বৃষ্টি তার বোনের সংসার বাঁচাতে সম্পর্ক থেকে দূরে সরে যায়। অন্যদিকে পারিবারিক ভাবে বৃষ্টির বিয়েও ঠিক হয়ে যায়। সুমন ক্ষিপ্ত হয়ে চূড়ান্ত ফয়সালার জন্য বৃষ্টিকে হুমকি দিয়ে ওই আবাসিক হোটেলে ডাকে এবং সেখানে তারা স্বামী স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে থাকে।’
র্যাব কমকর্তা আরো বলেন, ‘সমঝোতা না হওয়ায় একপর্যায়ে সুমন ক্ষিপ্ত হয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে খুন করে বৃষ্টিকে। পরে দাঁত দিয়ে ওড়না কেটে ওড়নার একাংশ ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। হোটেল থেকে বের হয়ে সুমন নিজেই তার বউ বৃষ্টির মেঝো বোন হাসনাকে ফোন করে জানায়, বৃষ্টি মগবাজারে একটি আবাসিক হোটেলে আত্মহত্যা করেছে। ঘটনার দিন থেকেই সুমন আত্মগোপনে ছিল।’
Copyright © 2010-2019